টেলিভিশন দুনিয়া মানেই ঝলমলে আলো, চটকদার চরিত্র আর দর্শকের অগাধ ভালোবাসা। এই দুনিয়ায় অনেকেই আসেন, আবার হারিয়েও যান। কিন্তু কিছু মুখ থেকে যায় আলাদা করে—যাদের শক্তিশালী উপস্থিতি ও স্বতন্ত্র সিদ্ধান্তই তাঁদের বিশেষ করে তোলে। সেই তালিকায় অন্যতম নাম পবিত্র পুনিয়া।
রিয়েলিটি শো থেকে তারকাখ্যাতি
২০০৯ সালে এমটিভির স্প্লিটসভিলা ৩–এর মাধ্যমে দর্শকের সামনে আসেন পবিত্র। তবে তাঁর বড় মোড় আসে ২০২০ সালের বিগ বস ১৪-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ঘরে ঘরে পরিচিতি পাওয়া, স্পষ্টভাষী মন্তব্য আর সহ–অভিনেতা এজাজ খানের সঙ্গে সম্পর্ক—সব মিলিয়েই তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। এর আগে ইয়ে হ্যায় মহব্বতেঁ এবং বলবীর–এর মতো ধারাবাহিকে অভিনয় করে ইতিমধ্যেই অভিনয় দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন তিনি।
বেছে নেওয়া কাজের দর্শন
খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার মাঝেও পবিত্র সবসময় নিজের জন্য রেখেছেন এক অদৃশ্য সীমারেখা। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, গত এক বছরে বেশ কয়েকটি অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। কারণ, ঘনিষ্ঠ দৃশ্য বা পোশাক সংক্রান্ত দাবি। তাঁর কথায়,
“এমন অনেক কাজ আমাকে দেওয়া হয়েছিল, যা করলে হয়তো আরও বেশি জনপ্রিয় হতাম। কিন্তু আমি ভাবি—এসব দৃশ্য কি পরিবার নিয়ে বসে দেখা যায়? যদি না যায়, তবে আমি কেন করব?”
এ বক্তব্যে ধরা পড়ে তাঁর অভিনয় দর্শন—খ্যাতি নয়, বরং কাজের সততাই তাঁর কাছে মুখ্য। এই অবস্থান তাঁকে হয়তো অনেক প্রজেক্ট থেকে দূরে রেখেছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তৈরি করেছে আলাদা মর্যাদা।
আলোচনায় ব্যক্তিজীবনও
ব্যক্তিগত জীবনও তাঁকে দিয়েছে সংবাদ শিরোনাম। এজাজ খানের সঙ্গে সম্পর্ক, ২০২২ সালের বাগ্দান, আর ২০২৪ সালের বিচ্ছেদ—সব মিলিয়ে আলোচনায় ছিলেন তিনি। তবে ব্যক্তিজীবনের ওঠানামা পেশাগত সিদ্ধান্তে কখনও প্রভাব ফেলেনি। বরং নিজের নীতি আঁকড়ে থাকার কারণেই তিনি অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা।
খ্যাতির চেয়ে মূল্যবোধের জয়
ভারতীয় বিনোদন দুনিয়ায় যেখানে কাজের চাপে অনেক সময় শিল্পীরা আপস করেন, সেখানে পবিত্র পুনিয়া নিজের পথ খুঁজে নিয়েছেন সততার মধ্যে দিয়ে। তাঁর গল্প মনে করিয়ে দেয়—খ্যাতি ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু নীতির প্রতি দৃঢ়তা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।