মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিয়ত ভারত ও পাকিস্তানের পরিস্থিতির ওপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখছে। এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুই এশীয় প্রতিবেশীর মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা রোধে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি টিকিয়ে রাখা সবসময়ই বড় চ্যালেঞ্জ।
পেহেলগাম হামলার পর সংঘাত
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় প্রাণ হারান ২৫ জন পর্যটক ও একজন স্থানীয় ঘোড়াচালক। এ ঘটনার পর ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় পৌঁছায়। মে মাসের শুরুতে দুই দেশের মধ্যে চার দিনব্যাপী সংঘর্ষ হয়। শেষ পর্যন্ত ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে উপনীত হয় দিল্লি ও ইসলামাবাদ।
সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেন, তাঁর হস্তক্ষেপেই দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। রুবিওও সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে জটিল দিক হলো এটিকে বজায় রাখা, যা খুবই কঠিন। প্রতিনিয়ত আমরা পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কী ঘটছে তার ওপর নজর রাখছি।”
রাশিয়া–ইউক্রেন প্রসঙ্গ
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়েও মত দেন রুবিও। তাঁর মতে, যুদ্ধবিরতিতে উপনীত হওয়ার একমাত্র শর্ত হলো উভয় পক্ষকে গুলি চালানো বন্ধে সম্মত হতে হবে। তিনি বলেন, “রাশিয়া এখনো এতে রাজি হয়নি। যুদ্ধবিরতি খুব দ্রুত ভেঙে পড়তে পারে, বিশেষ করে সাড়ে তিন বছরের যুদ্ধ শেষে। তবে লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি, যাতে বর্তমানের মতো সংঘাত আর না থাকে।”
ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক
ফক্স বিজনেসকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে রুবিও আবারও উল্লেখ করেন ভারত–পাকিস্তানের সংঘাত ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকা। তাঁর ভাষায়, “আমরা সৌভাগ্যবান যে আমাদের এমন একজন প্রেসিডেন্ট আছেন, যিনি শান্তি প্রতিষ্ঠাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। আমরা কম্বোডিয়া–থাইল্যান্ড থেকে শুরু করে ভারত–পাকিস্তান, এমনকি রুয়ান্ডা ও কঙ্গোতেও তা দেখেছি।”
ট্রাম্প নিজেও ১০ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় রাতভর দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত–পাকিস্তান পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে স্পষ্টভাবে জানান, কোনো দেশের নেতা ভারতের কাছে সামরিক অভিযান থামানোর অনুরোধ করেননি। একইভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে তৃতীয় পক্ষের কোনো ভূমিকা ছিল না এবং বাণিজ্যের সঙ্গে সামরিক অভিযানের কোনো সম্পর্ক নেই।