নিউইয়র্ক, ২৪ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য একটি ভিত্তিমূলক ঘটনা হবে। তিনি এ মন্তব্য করেন নিউইয়র্কে প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগোর সঙ্গে বৈঠককালে।
বিশ্ব রাজনীতির অঙ্গনে এই বৈঠক বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। কারণ বাংলাদেশ বর্তমানে একটি সংবেদনশীল রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কার্যক্রম চালাচ্ছে, যার সাফল্যের অন্যতম সূচক হবে আসন্ন নির্বাচন।
রাজনৈতিক আলোচনা
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস স্পষ্টভাবে বলেন, “এই নির্বাচন শুধু একটি ভোটগ্রহণ নয়, এটি হবে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি।” হিদালগো তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, “আপনার কাজ মানবতার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।”
মানবিক সংকট
রোহিঙ্গা ইস্যুতেও বৈঠকে গুরুত্বারোপ করা হয়। উভয় নেতা আন্তর্জাতিক তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান জানান এবং একমত হন যে বৈশ্বিক সহযোগিতা ছাড়া এ সংকট সমাধান সম্ভব নয়। ইউনূস জানান, জাতিসংঘ আগামী সপ্তাহে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করবে, যা সমস্যাটিকে আবারও বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসবে।
ক্রীড়া ও সামাজিক উদ্যোগ
আলোচনায় ক্রীড়া ও অলিম্পিক বিষয়ও উঠে আসে। অধ্যাপক ইউনূস প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিকে সামাজিক ব্যবসার ধারণা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ভবিষ্যতের সব অলিম্পিক—বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক—কার্বন নিরপেক্ষ করার ওপর জোর দেন। হিদালগো তাঁর উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে সমর্থন জানান।
বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নিউইয়র্কে এই বৈঠক শুধু কূটনৈতিক আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এটি বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের বৈশ্বিক গুরুত্বকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। ইউরোপীয় এবং পশ্চিমা নেতৃত্বের সঙ্গে এমন সংলাপ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রার প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে বৈশ্বিক সমর্থন পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টাও সামনে এসেছে।
বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।