6
নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধ ও সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেনারেশন জেড প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া আন্দোলন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে সোমবার সকালে শুরু হওয়া বিক্ষোভ বিকেলে সহিংসতায় রূপ নেয়। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী নিরাপত্তা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে।
এ সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি, টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে অন্তত তিনজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি রাজধানীতে কারফিউ জারি করেছে সরকার।
এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে, সরকার সম্প্রতি ২৬টি অনিবন্ধিত প্ল্যাটফর্ম ব্লক করার পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সসহ একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজপথে নামে নেপালের তরুণ সমাজ।
জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে আন্দোলন শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। পরে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
২৪ বছর বয়সী ছাত্রী যুজন রাজভান্ডারী বলেন, “নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। তবে শুধু এই কারণে নই, দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আমরা এখানে এসেছি।”
আরেক শিক্ষার্থী ইক্ষমা তুমরোক বলেন, “আমরা পরিবর্তন চাই। আমাদের প্রজন্মেই কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের অবসান ঘটাতে হবে।”
প্রতিবাদকারীদের দাবি, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কষ্ট বাড়ছে, অথচ রাজনীতিবিদদের সন্তানরা বিলাসী জীবনযাপন করছে। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে টিকটকে এসব তুলনামূলক ভিডিও ভাইরাল হয়, যা প্রতিবাদের আগুনে ঘি ঢালে।
উল্লেখ্য, গত মাসে নেপাল সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোকে সাত দিনের মধ্যে দেশে নিবন্ধন করতে হবে, প্রতিনিধি রাখতে হবে এবং অভিযোগ ব্যবস্থাপনায় কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে। সরকারের দাবি, এই সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার আলোকে নেওয়া হয়েছে।
অতীতে নেপাল টিকটক ও টেলিগ্রামসহ একাধিক প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তবে নিয়ম মেনে চলতে সম্মত হওয়ার পর কিছু প্ল্যাটফর্ম থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।