অর্থ মন্ত্রণালয় আগামী নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি নতুন গাড়ি কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত মডেল হলো মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭, যার প্রতিটি গাড়ির দাম এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা। মোট ৬০টি গাড়ি ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন কর্মকর্তাদের জন্য ১৯৫টি পাজেরোসহ মোট ২২০টি গাড়ি কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কেনার ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২১ আগস্ট এই প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রী, মন্ত্রী পদমর্যাদার উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর জন্য গাড়ি কেনার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় গাড়িগুলো কেনা হবে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারি পরিবহন পুলে মানসম্মত গাড়ি নেই। বর্তমানে উপদেষ্টারা যে গাড়ি ব্যবহার করছেন, সেগুলো ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কেনা, যা প্রায়শই মেরামত করতে হয়। নতুন গাড়ি না থাকায় নির্বাচিত মন্ত্রীদের জরুরি সফর, উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন ও সরকারি কাজের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জন্য ১৯৫টি জিপ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য ২৫টি মাইক্রোবাস কেনা হচ্ছে। প্রতিটি জিপের দাম এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, প্রতিটি মাইক্রোবাসের দাম ৫২ লাখ টাকা। ২২০টি গাড়ি ক্রয়ে ব্যয় হবে ৩৪৩ কোটি ২৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
গত অর্থবছরে যানবাহন অধিদপ্তরের বাজেটে মোটরযান ক্রয়ের জন্য ৩২৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও, ২৮০টি গাড়ি কেনার জন্য ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অতিরিক্ত ৯৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা অন্যান্য খাত থেকে ব্যবহার করা হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, “মন্ত্রিসভা ও উপদেষ্টাদের গাড়ি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন গাড়ি কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে।”
তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন তুলেছেন, কেন অন্তর্বর্তী সরকার পরবর্তী সরকারের জন্য গাড়ি কিনছে। তিনি বলেন, “এটি বর্তমান সরকারের ম্যান্ডেট নয়, তাই সিদ্ধান্তটি বাতিল হওয়া উচিত।”